Monday, August 6, 2018

ব্যবসায়ে ইমোশনাল মার্কেটিং

বাঙালী জাতি হিসেবে একটু আধটু নয় বেশ বড় ধরনের ইমোশনাল আমরা। আর যাই হোক সহজে বিশ্বাস
যোগ্যতার কারনে ইমোশন ব্যাপারটা আমাদের মধ্যে খুব সহজে প্রভাব বিস্তার করে। আর সেটাকে একটু
দক্ষতার সাথে কাজে লাগাতে পারলে মার্কেটিংয়ে সফলতা পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয়।
তবে অবশ্যই কাজটি নির্ভুল হওয়া চাই। সেই সাথে সাবধানতা ও দক্ষতার সাথে করতে হবে কাজটি।
কর্পোরেট এবং রিটেইল মার্কেটিং উভয় ক্ষেত্রেই ইমোশন কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করাটা বেশ কার্যকর। আর ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরীর ক্ষেত্রে ইমোশোনাল প্রসার কার্যক্রমে সফলতা বেশী পাওয়া যায়। প্রতি ঈদের আগে প্রচারিত গ্রামীন ফোনের ’স্বপ্ন যাবে বাড়ী আমার’ গানের সাথে প্রচারিত বিজ্ঞাপনটির কথা মনে আছে নিশ্চয়। ভুলে যাবার কথা নয়। কারন এই বিজ্ঞাপনটি যে পরিমান ইমোশনাল ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরী করেছে তা অকল্পনীয়। ঈদে বাড়ি ফেরার আনন্দের সাথে যত দূরে যান সাথে থাকুন। আপনার ইমোশনকে সঠিক প্রক্রিয়ায় কাজে লাগিয়ে ব্যবসা জমজমাট।
কাজলের ভাত বিক্রি(বাংলালিংক) , মাঝির বেটার শিক্ষা(বিজিএমইএ), ইয়োর কান্ট্রি বিল্ডিং মাই মাই কান্টির সিমেন্ট, (ক্রাউন সিমেন্ট),
আমি যখন জিতে যাই জিতে যায় মা (ফ্রেস ফুলক্রিম মিল্ক পাউডার), আমরা পৃথিবীটাকে জানতে চাই, পড়ালেখা করে বড় মানুষ হতে চাই (গুডলাক বলপেন),
আব্বা হেলিকপ্টার কিনে দিবে (মাইক্যাশ), খেটে খাওয়া দু হাত আর দুপা (ভ্যাসলিন) এমন অসংখ্য ইমোশনাল
বিজ্ঞাপন শুধু মাত্র মানুষের ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে মার্কেট শেয়ার দখল করে চলেছে।
ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে আপনি ক্রেতার গ্যাপ পার্টনার হতে পারলে সফলতা পাওয়ার রাস্তাটা সহজ হয়ে যাবে।
আপনি ক্রেতার কাছে আপনার সফলতার চেয়ে প্ররিশ্রমী ও উদ্যোমী মানুষ হিসেবে পরিচিত পারলে গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে।
আপনি যদি সত্যিকার অর্থেই আপনাকে উপস্থাপন করতে পারেন সেক্ষেত্রে সেলস নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না।
সমস্ত বিশ্বের প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় অনুভুতি সেলসের ক্ষেত্রে বেশ বড় একটা প্রভাব বিস্তার করে আছে। এ্যারোমেটিক
বিউটি সোপের কথা মনে আছে কি? ‍শুধুমাত্র ১০০ ভাগ হালাল সোপ কথাটি ব্যবহার করে মার্কেটের অধিকাংশ শেয়ার
দখল করেছিল কোম্পানীটি। এবং সেটি সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র রিলেজিয়াস ইমোশন থেকে।
আমাদের দেশে যে সমস্ত হারবাল পন্যের হকারের দেখা পাওয়া যায় তারা আসলে ঠিক কতটুকু পরিমান সেবা বিক্রি করছে তা একটু খানি চিন্তা করলে
আমার থেকে আপনি ভাল বুঝতে পারবেন। শুধুমাত্র মানুষের ইমোশনকে পুঁজি করে তারা ব্যবসায় করে চলেছে।
আর মাজার পূজারী ভন্ডদের কথা না হয় নাই বললাম।

সত্য সুন্দর উপস্থাপনায় আপনি একজন মানুষের ফোকাস আপনার পণ্যের দিকে ধাবিত করতে পারলেই ব্যবসায়িক সফলতা।
মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার ব্যাক্তিগত বিষয় সম্পর্কে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে ক্রেতার ধ্যান ধারণা
বিশ্বাস মূল্যবোধ সম্পর্কে জানতে হবে।
শুধুমাত্র ক্রেতার পছন্দ অপছন্দ নয় তার ব্যাক্তিগত বেশ কিছু সহজ বিষয়ও কৌশলে জেনে নিতে হবে।
বিষয়টি আরও একটু পরিস্কার করি।
একজন ক্রেতার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্ক সৃষ্টিই আপনার মূখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ নয়।
মানবিক, স্পর্শকাতর ও ভালবাসার দিকগুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে আপনাকে। এটা একটি সফট কর্ণার।
ক্রেতার সাথে পরিচয়ের প্রথম দিকে পারলে তার পরিবার সম্পর্কে জেনে নিন। নিয়মিত খোঁজ খবর করুন তাদের
সুস্থ্যতা, পড়াশুনা সহ অন্যান্য ইতিবাচক দিকগুলো কেমন চলছে সে বিষয়ে। কোন সমস্যায় থাকলে সাহায্য
করার চেষ্টা করুন একান্ত না পারলে সমাধানযোগ্য পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করুন। তাকে আশ্বস্ত করুন আপনি
তার পাশে আছেন যে কোন বিপদে।
আপনার প্রতি আপনার ক্রেতার মনে একটা সফট কর্ণার সৃষ্টি হবে। আপনাকে তাদের পরিবারেরই একজন মনে
করতে শুরু করবে। ইতিবাচক সফলতার সাথে সেলস বাড়তে থাকবে। ক্রেতার কাছে আপনার ব্যক্তিগত
একটা সুন্দর ইমেজ তৈরী হবে, গ্রহন যোগ্যতা বাড়বে।
ক্রেতা আপনার প্রতিযোগীর পন্যের থেকে আপনার পন্যে বেশী বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে।
এবং সেটা শুধুমাত্র আপনার ব্যক্তিক রিলেশনের উপরেই। চলবে…
লেখক: মোঃ মাসুদুর রাহমান মাসুদ ভাই।

Previous Post
Next Post

post written by:

0 comments:

আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ